কানাডা ১০ টি প্রদেশ ও তিনটি অঞ্চল নিয়ে গঠিত। দেশটি আটলান্টিক মহাসাগর থেকে প্রশান্ত মহাসাগর এবং উত্তরে আর্কটিক মহাসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। কানাডার মাটি বেশ উর্বর। যার ফলে বিভিন্ন ফসল কানাডায় উৎপাদন করা হয়। কানাডায় একজন কৃষি কাজে দক্ষ কর্মীর মাসিক বেতন ন্যূনতম ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এছাড়া কৃষি কাজে যারা নতুনে নিয়োগ পায় তাদের বেতন ন্যূনতম ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪০ অথবা ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
বিশ্বের সব থেকে ধনী রাষ্ট্রগুলোর তালিকায় কানাডার নাম প্রথম সারিতে থাকেএবং এটি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্র। কানাডা উন্নত রাষ্ট্র হওয়ায় কানাডার স্থায়ী বাসিন্দারা কৃষি কাজে অভ্যস্ত নন। ফলে তারা বিভিন্ন দেশ থেকে কৃষি ভিসার মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকে। কানাডায় একজন নাগরিকের জন্য যে সকল ফসল উৎপাদন করা প্রয়োজন তার প্রায় সকল ফসলই উৎপাদন করা হয়।
কানাডা কৃষি ভিসা বলতে কি বোঝায়
ভিসা বলতে নাগরিত্বহীন কোন দেশে বৈধভাবে প্রবেশের অনুমতি পত্র কে বোঝানো হয়। সেই সূত্রে কানাডা কৃষি ভিসা বলতে কানাডায় বৈধভাবে কৃষি কাজ করার অনুমতি পত্রকে বোঝানো হয়। কানাডা উন্নত শীল একটি রাষ্ট্র। যার ফলশ্রুতিতে কানাডার অধিকাংশ স্থায়ী বাসিন্দা শহর অঞ্চলে বসবাস করে।
যার কারণে কানাডা সরকার প্রতি বছর বিভিন্ন দেশ থেকে কৃষি কাজ করার জন্য অসংখ্য কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকে। বছরের বিভিন্ন সময় কানাডা কৃষি ভিসার সার্কুলার প্রকাশ করা হয়। এ সার্কুলার অনুযায়ী কৃষি ভিসার আবেদন করতে হবে।
কানাডা কৃষি কাজের বেতন কত
পৃথিবীর কোন কাজই পারিশ্রমিক হীন করানো হয় না। সকল শ্রমিক বা কর্মীকেই দৈনিক অথবা মাসিক বেতন প্রদানের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়। কানাডা কৃষি কাজও এর ব্যতিক্রম নয়। কানাডায় কৃষি কাজ করে মাস শেষে মোটা অংকের টাকা বেতন পাওয়া যায়।
কৃষি কাজের ধরন অনুযায়ী কানাডা কৃষি কাজের বেতন দেওয়া হয়। যেমন ফসলি জমি পরিচ্ছন্নকারী কর্মীর বেতন আনুমানিক প্রায় ৩০ হাজার টাকা থেকে ৪০ হাজার টাকা হয়ে থাকে। অপরদিকে ফসল উৎপাদনকারী সকল কর্মীদের বেতন ন্যূনতম প্রায় ৪২ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
কানাডা কৃষি ভিসার দাম কত টাকা?
কানাডায় অসংখ্য কৃষি কাজের সুযোগ রয়েছে। তবে কৃষি কাজে কানাডা যেতে হলে কৃষি ভিসা থাকা প্রয়োজন। কানাডা ভিসা তৈরি করতে লাখ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হয়। তবে আশা করা হচ্ছে কানাডা কৃষি ভিসা তৈরির খরচ পূর্বের তুলনায় কিছুটা কমবে।
সরকারি ও বেসরকারি দুই রকম ভাবে কানাডা কৃষি ভিসা তৈরি করা যায়। এছাড়া বিভিন্ন সংস্থা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কৃষি কাজে দক্ষ করে কানাডা পাঠানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। বর্তমানে কানাডা কৃষি ভিসা তৈরি করতে ন্যূনতম প্রায় ৫ লাখ টাকা থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে থাকে।
কানাডায় কি কৃষি কাজের চাহিদা আছে?
কানাডা উন্নত রাষ্ট্র হওয়ায় কৃষি কাজ করার জন্য পর্যাপ্ত শ্রমিক নেই। যার ফলে কানাডা কৃষি কাজের চাহিদা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। কানাডা প্রতি বছর বিদেশি কর্মীর মাধ্যমে অনেক ফসল উৎপাদন করে থাকে। এসব ফসলি জমি পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে বীজ বপন ও ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত বিদেশি কর্মী দিয়ে কাজ করানো হয়।
অসংখ্য বাংলাদেশী নাগরিক কানাডা এ সকল কৃষি কাজ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। বিভিন্ন কাজ অনুযায়ী তারা বিভিন্ন ধরনের বেতন পেয়ে থাকে। এছাড়া মালিকাধীন কৃষি কাজে মাসিক অথবা বাৎসরিক বোনাস পাওয়া যায়। এছাড়া কানাডাতে কৃষি কাজে দক্ষ কর্মীদের ভিন্ন ভাবে মূল্যায়ন করা হয়।
কানাডা কি কি কৃষি কাজ করা হয়?
কানাডায় বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করা হয়। কানাডা উন্নত দেশ হলেও গম, ভুট্টা, ধান, ওট, যব ,সয়াবিন ,আলু থেকে শুরু করে সব ধরনের ফসলের উৎপাদন রয়েছে। বর্তমানে কানাডা সরকার এই সকল ফসল অধিক পরিমাণে উৎপাদন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে।
কানাডা কৃষি ভিসা আবেদন করার নিয়ম
বর্তমানে কানাডা ভিসা পেতে সর্ব প্রথম আপনাকে কানাডা সরকারের অনুমোদিত কোন বাংলাদেশি এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করতে হবে। অথবা কানাডাতে উপস্থিত কোন ব্যক্তির সাহায্য নিয়ে কানাডা ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। সামান্য কিছু টাকা আবেদন প্রদানের মাধ্যমে কানাডা কৃষি ভিসার জন্য আবেদন করা যায়।
বর্তমানে কানাডা কৃষি ভিসা তৈরীর জন্য সব থেকে সহজ উপায় হল অনলাইনে আবেদন করা। এক্ষেত্রে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে আবেদন ফরম পূরণ করার মাধ্যমে কানাডা কৃষি ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদন ফরম পূরণ করে কিছু কাগজপত্র জমা দিয়ে আবেদন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।
কানাডা কৃষি ভিসা আবেদনের জন্য কি কি কাগজপত্র লাগবে
কানাডা কৃষি ভিসা তৈরি করতে বেশ কিছু কাগজ পত্র প্রয়োজন। এ সকল কাগজপত্র সঠিক থাকলে অল্প দিনে ভিসা তৈরি হয়ে যায়। জমাকৃত কাগজ পত্র সঠিক না থাকলে ভিসা তৈরিতে অনেক দিন পর্যন্ত সময় লেগে যায়।
- একটি বৈধ পাসপোর্ট ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
- সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড এর ১০ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- মেডিকেল সার্টিফিকেট ও ভিসা আবেদন ফরম।
- এলএমআইএ নাম্বার ইত্যাদি।
কানাডায় কৃষি কাজের সুযোগ থাকলেও অদক্ষ কর্মীদের কাজ পেতে সমস্যায় পরতে হয়। তাই একজন অদক্ষ কর্মীর জন্য পরামর্শ থাকবে কানাডা কৃষি কাজে যাওয়ার আগে অবশ্যই নিজেকে একজন দক্ষ কৃষক হিসাবে তৈরি করে নিবেন। কয়েক ধরনের ফসল উৎপাদনে নিজেকে দক্ষ করে কানাডা গেলে চাকরির নিশ্চয়তা থাকে শতভাগ।
আরও পড়ুনঃ