মেরিন ইঞ্জিনিয়ারের বেতন কত ২০২৪

ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরে অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধ ক্যারিয়ার গড়ার অন্যতম সেক্টর মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং। একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ারের কর্ম ক্ষেত্র স্থল এবং জল উভয় জায়গায় হতে পারে। একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার তার পেশাকে কেন্দ্র করে পুরো বিশ্ব ভ্রমণের সুযোগ পেয়ে থাকে। বাংলাদেশে সরকারি এবং বেসরকারি উভয় প্রতিষ্ঠানে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি পাওয়া যায়। বর্তমানে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি পেতে পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হয়। কেননা বর্তমানে অসংখ্য শিক্ষিত তরুণ মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি করার আগ্রহ প্রকাশ করছে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে চার বছর ও দুই বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স করানোর মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে তৈরি করা হয়। তবে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এর ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি হতে নূন্যতম এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। দক্ষতা অনুযায়ী একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ারের বেতন নির্ধারণ করা হয়। একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ারের ন্যূনতম মাসিক বেতন সর্বনিম্ন প্রায় ২ লাখ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ প্রায় ১৮ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। স্থান ও প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী এ বেতন কম বেশি হয়ে থাকে।

একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এর কাজ কি

বর্তমান বাংলাদেশের শিক্ষিত তরুণ প্রজন্মের ক্যারিয়ার গড়ার অন্যতম উপায় মেরিন ইঞ্জিনিয়ার। একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মূলত সমুদ্রগামী জাহাজ ও নেভিগেশন সরঞ্জামের নকশা, উদ্ভাবন, নির্মাণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কিত সকল বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এছাড়া একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার প্রাথমিক ভাবে নৌযান, জাহাজ, বিমানবাহী বাহক, সাবমেরিন, ট্যাঙ্কার ইত্যাদির অভ্যন্তরীণ সিস্টেমের উন্নয়নে ভূমিকা পালন করে।

মেরিন ইঞ্জিনিয়ারের বেতন কত

জাহাজের ধরনের উপর একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ারের বেতন নির্ভর করে। এছাড়া পদমর্যাদা অনুযায়ী জাহাজ কর্তৃপক্ষ ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন নির্ধারণ করে থাকে। একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকে। মূলত একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার ক্যাডেট হিসেবে ৪০০ ইউ এস ডলার থেকে ৭০০ ইউ এস ডলারের কাজ শুরু করে থাকে।

অতঃপর একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার ক্যাডেট থেকে বিভিন্ন রেঙ্কে পদোন্নতি পেয়ে কয়েক হাজার ডলার পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকে। একজন মেরিন চীফ ইঞ্জিনিয়ারের ন্যূনতম মাসিক বেতন ৮,১০০ ইউ এস ডলার থেকে ১২ হাজার ইউ এস ডলার পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে কোম্পানি অনুযায়ী একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার প্রতি মাসে ন্যূনতম ২ হাজার ইউ এস ডলার থেকে ৭ হাজার ইউ এস ডলার পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকে।

মেরিন চীফ ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন কত

বর্তমানে বিশ্ব বাণিজ্যের একটি বড় অংশ বিভিন্ন দেশের নৌপথ কে কেন্দ্র করে পরিচালিত হয়ে থাকে এবং সামুদ্রিক জাহাজ এ সকল বাণিজ্যের পণ্য পরিবহনের প্রধান মাধ্যম। বিশ্ব বাণিজ্যের পণ্য পরিবহনের জাহাজ গুলোকে সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়ে পরিচালনা করা একজন চিফ ইঞ্জিনিয়ারের প্রধান দায়িত্ব। এছাড়া একজন চিফ ইঞ্জিনিয়ার জাহাজে থাকা অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ারদের পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করে থাকে।

এক জন মেরিন চীফ ইঞ্জিনিয়ার পদ মর্যাদার দিক থেকে সবচেয়ে উপরে শ্রেণীতে হয়ে থাকে। বিভিন্ন কোম্পানি অনুযায়ী চীফ ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। একজন মেরিন চিফ ইঞ্জিনিয়ার এর ন্যূনতম মাসিক বেতন সর্বনিম্ন প্রায় ৮ লাখ টাকা থেকে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এছাড়া কোম্পানি অনুযায়ী একজন ইঞ্জিনিয়ার এর সর্বোচ্চ মাসিক বেতন ১৭ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

মেরিন সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার এর বেতন কত

জাহাজ চালানোর ক্ষেত্রে জাহাজের ইঞ্জিন বা মেশিন সম্পর্কিত কোনো সমস্যা সমাধান এবং রক্ষণাবেক্ষণের সমগ্র কাজ সেকেন্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ার করে থাকে। বিদেশি প্রতিষ্ঠানে একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার অনেক টাকা বেতনে নিয়োগ পেয়ে থাকে। একজন সেকেন্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এর সর্বোচ্চ বেতন নূন্যতম প্রায় ৫ হাজার ইউ এস ডলার থেকে শুরু করে ৭ হাজার ইউ এস ডলার পর্যন্ত হতে পারে।

মেরিন থার্ড ইঞ্জিনিয়ার এর বেতন কত

সামুদ্রিক জাহাজের একজন থার্ড ইঞ্জিনিয়ার এমন একজন পেশাদার ব্যক্তি যিনি বিশেষায়িত ম্যারিন ইঞ্জিনিয়ার বিদ্যায় অধ্যয়ন করেছে। একজন থার্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ার পদোন্নতি পেয়ে সেকেন্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং যোগ দিয়ে থাকে। থার্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ার বেতনের দিক থেকে সেকেন্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এর কাছা কাছি হয়ে থাকে। একজন থার্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এর ন্যূনতম মাসিক বেতন সর্বনিম্ন প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকে।

গ্যাস ট্যাংকার জাহাজে চীফ ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন কত

ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এর পেশা একটি চ্যালেঞ্জিং পেশা। কেননা প্রতিনিয়ত জীবন বাজি রেখে দীর্ঘ সময় সমুদ্রের মধ্যে পার করতে হয়। বর্তমানে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন ধরনের বেতন দিয়ে থাকে। বাংলাদেশের অসংখ্য কোম্পানি গ্যাস বাণিজ্য নিয়ে কাজ করে থাকে। এ সকল কোম্পানির গ্যাস ট্যাংকার জাহাজের একজন চীফ ইঞ্জিনিয়ারের ন্যূনতম মাসিক বেতন সর্বনিম্ন প্রায় ১২ লাখ টাকা থেকে ১৬ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

অয়েল ট্যাংক জাহাজে চীফ ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন কত

একটি দেশের জন্য তেল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পণ্য। বিভিন্ন সময় বাইরের দেশ থেকে তেল আমদানি করার প্রয়োজন পড়ে। এ ক্ষেত্রে স্থল পথ ও আকাশ পথে তেল আমদানি করা বেশ ব্যয় বহুল। যার ফলে জাহাজের মাধ্যমে নৌপথে তেল আমদানি করা হয়।

বাংলাদেশ বিভিন্ন কোম্পানি রয়েছে যারা অয়েল ট্যাংক জাহাজ পরিচালনা করে থাকে। একজন অয়েল ট্যাংক জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারের ন্যূনতম মাসিক বেতন সর্বনিম্ন প্রায় ১০ হাজার ইউ এস ডলার থেকে সর্বোচ্চ প্রায় ১৪ হাজার ইউ এস ডলার পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে কোম্পানি ভেদে ওয়েল ট্যাংক জাহাজের একজন চীফ ইঞ্জিনিয়ার এর বেতন ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

কার্গো ও কন্টেইনার জাহাজে চীফ ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন কত

এক দেশ থেকে অন্য দেশে নৌপথে সামগ্রিক জাহাজের মাধ্যমে পণ্য স্থানান্তর করতে তা প্রথমে কন্টেইনারে আবদ্ধ করতে হয়। উক্ত কন্টেইনার সামুদ্রিক জাহাজে পরিপূর্ণ করার পর নির্দিষ্ট গন্তব্যে রওনা হয়। এ সকল কার্গো ও কন্টেইনার বাহী সামুদ্রিক জাহাজের একজন চিফ ইঞ্জিনিয়ারের ন্যূনতম মাসিক বেতন ৯ হাজার ইউ এস ডলার থেকে ১৩ হাজার ইউ এস ডলার পর্যন্ত হয়ে থাকে। অর্থাৎ কন্টেইনার বাহী জাহাজের একজন চিফ ইঞ্জিনিয়ার সর্বোচ্চ ১২ থেকে ১৩ লাখ টাকা পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকে।

বর্তমানে অসংখ্য সামুদ্রিক জাহাজ কোম্পানি রয়েছে। যারা বাণিজ্যের সকল পণ্য এক দেশ থেকে অন্য দেশে জাহাজের মাধ্যমে স্থানান্তর করে থাকে। সামুদ্রিক জাহাজে বেশ কয়েক জন ইঞ্জিনিয়ার রয়েছে। এ সব ইঞ্জিনিয়ার এর পদ মর্যাদা অনুযায়ী বেতন প্রদান করা হয়। সামুদ্রিক জাহাজের সকল ইঞ্জিনিয়ারের বেতন লাখ টাকার উপরে হয়ে থাকে। তবে অধিক বেতন পেতে কঠোর পরীক্ষার মাধ্যমে পদোন্নতি লাভ করতে হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top