১১ তম গ্রেডে বেতন কত ২০২৪

পূর্বে যে সকল চাকরি তৃতীয় শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত ছিল তা বর্তমানে ১১ তম গ্রেড থেকে ১৬ তম গ্রেড হিসাবে উল্লেখ করা হয়। বর্তমান বাংলাদেশের চাকরির বাজারে ১১ তম গ্রেডের চাকরি পাওয়া আকাশ ছোঁয়া ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১১ তম গ্রেডে চাকরি পাওয়ার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে পরিশ্রম এবং অনেক বেশি পড়াশোনা করতে হয়। বর্তমানে ১১ তম গ্রেডে চাকরি পাওয়ার জন্য অনেক বেশি পরিশ্রম করে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হয়। কেননা ১১ তম গ্রেডে চাকরি পেতে অনেক প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়।

১১ তম গ্রেডের চাকরির পরীক্ষায় একটি আসনের বিপক্ষে শত শত প্রার্থী পরীক্ষা দিয়ে থাকে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গ্যাজেট অনুযায়ী ১১ তম গ্রেডের সর্বসাকুল্যে বেতন ২১,১২৫ টাকা ধরা হয়। তবে ১১ তম গ্রেডের চাকরি শুরুর মূল বেতন সর্বনিম্ন ১২,৫০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ বেতন ৩২,২৪০ টাকা প্রদান করা হয়। চাকরি শুরুর মূল বেতন প্রতি বছর ৫% হারে বৃদ্ধি পেয়ে সর্বোচ্চ বেতনে পৌঁছাবে। সর্বোচ্চ বেতন পেতে ধৈর্য সহকারে দীর্ঘদিন যাবত ১১ তম গ্রেডে দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে।

১১ তম গ্রেডে বেতন কত

প্রত্যেকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তাদের বৈষম্য দূর করার জন্য ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সরকার একটি গ্যাজেট পাশ করে। এই গ্যাজেট সর্বমোট ২০টি গ্রেড রয়েছে। এই গ্রেড অনুযায়ী ২০১৫ সাল থেকে বর্তমান ২০২৪ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন ভাতা প্রদান করা হচ্ছে।

মূলত ১১ তম গ্রেড দ্বিতীয় শ্রেণীর পরবর্তী গ্রেড। ১১ তম গ্রেডে কর্মরত কর্মকর্তাদের ন্যূনতম মাসিক বেতন সর্বনিম্ন ১২,৫০০ টাকা প্রদান করা হয়। অর্থাৎ ১১ তম গ্রেডে একজন কর্মকর্তা চাকরির শুরুতে ১২,৫০০ টাকা বেতন পায়। ১১ তম গ্রেডের একজন কর্মকর্তা এই শুরুর বেতন বৃদ্ধি পেয়ে সর্বোচ্চ ৩২,২৪০ টাকা পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকে।

১১ তম গ্রেডের বেতন স্কেল

১৯৭৩ সালে ১০ টি গ্রেড অনুযায়ী সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তাদের বেতন প্রদান করা হতো। যা নিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে পূর্বে অনেক বৈষম্য তৈরি হতো। যার ফলশ্রুতিতে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সরকার পুনরায় সর্বমোট ২০ টি গ্রেড নিয়ে একটি গ্যাজেট পাস করে। এই গ্যাজেটের আওতায় ১১ তম গ্রেডের চাকরি শুরুর মূল বেতন ১২,৫০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ বেতন ৩২,২৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

১১ তম গ্রেডের বেতন স্কেল: ১২৫০০- ১৩১৩০- ১৩৭৯০- ১৪৪৮০- ১৫২১০- ১৫৯৮০- ১৬৭৮০- ১৭৬২০- ১৮৫১০- ১৯৪৪০- ২০৪২০- ২১৪৫০- ২২৫৩০- ২৩৬৬০- ২৪৮৫০- ২৬১০০- ২৭৪১০- ২৮৭৯০- ৩০২৩০- ৩২২৪০/-

১১ তম গ্রেড কোন শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত

পূর্বে শ্রেণী অনুযায়ী সকল কর্মকর্তাদের বেতন ভাতা প্রদান করা হতো। তবে গ্রেড অনুযায়ী গ্যাজেট পাস হওয়ার পর গ্রেড গুলো চারটি শ্রেণীতে বিভক্ত করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের আজকের মূল আলোচ্য বিষয় ১১ তম গ্রেড তৃতীয় শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। মূলত ১১ তম গ্রেডের বেতন স্কেল দিয়েই তৃতীয় শ্রেণি শুরু হয় এবং ১৬ তম গ্রেডের মধ্যে দিয়ে তৃতীয় শ্রেণীর সমাপ্তি ঘটে।

১১ তম গ্রেডে সর্বসাকুল্য বেতন কত

পূর্বে পাস হওয়া গ্যাজেট অনুযায়ী ১১ তম গ্রেডের মূল বেতন ছিল ৬,৪০০ টাকা। যা পরবর্তী গ্যাজেটে বৃদ্ধি পেয়ে ১২,৫০০ টাকা হয়েছে। ১১ তম গ্রেডে সকল ভাতা একত্রে (১২৫০০+ ৫৬২৫+ ১৫০০+ ২০০+ ৩০০) সর্বমোট ২০,১২৫/- টাকা হয়। অর্থাৎ ১১ তম গ্রেডে সর্বসাকুল্য বেতন ২০,১২৫ টাকা। তবে এই সর্বসাকুল্য বেতন থেকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা কর্তন করে রাখা হয়। যা অবসর সময় যথাযথ বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

১১ তম গ্রেডে কত টাকা ভাতা দেওয়া হয়

সকল সরকারি কর্মকর্তাদের বেতনের পাশাপাশি ভাতাও গ্রেড অনুযায়ী প্রদান করা হয়। একজন তৃতীয় শ্রেণীর প্রথম সারির কর্মকর্তা প্রতি মাসে মূল বেতনের সাথে একাধিক ভাতা পেয়ে থাকে। সরকারি কর্মকর্তা সহ বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও এই ভাতা অনুসরণ করা হয়।

  • অর্থনৈতিক কোড- ৩১১১২০১ মুল বেতনঃ ১২,৫০০/- টাকা
  • অর্থনৈতিক কোড- ৩১১১৩১০ বাড়িভাড়া ভাতাঃ ৫৬২৫/- টাকা (ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এলাকার জন্য ৬০% ও চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ ও গাজিপুর সিটি কর্পোরেশন এবং সাভার এলাকার জন্য ৫০% এবং অন্যান্য স্থানের জন্য ৪৫% হারে প্রদান করা হবে। )
  • অর্থনৈতিক কোড- ৩১১১৩১১ মেডিকেল ভাতাঃ ১৫০০/- টাকা
  • অর্থনৈতিক কোড- ৩১১১৩১৪ টিফিন ভাতাঃ ২০০/- টাকা
  • অর্থনৈতিক কোড- ৩১১১৩০২ যাতায়াত ভাতাঃ ৩০০/- টাকা

১১ তম গ্রেডে শিক্ষা সহায়ক ভাতা কত টাকা

বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ১১ তম গ্রেডের কর্মকর্তারা যে সকল সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকে তার মধ্যে শিক্ষা সহায়তা অন্যতম। ১১ তম গ্রেডের কর্মকর্তাদের একটি সন্তানের জন্য ৫০০ টাকা এবং দুটি সন্তানের জন্য ৫০০ টাকা অনুযায়ী ১,০০০ টাকা শিক্ষা সহায়ক ভাতা পেয়ে থাকে। তবে ২ টি সন্তানের অধিক সন্তান থাকলে কেবল মাত্র ২ টি সন্তানের জন্যই শিক্ষা সহায়ক ভাতা কার্যকর হবে।

১১ তম গ্রেডে বোনাস কত টাকা

বর্তমানে ১১ তম গ্রেডে কর্মরত সকল কর্মকর্তাদের বাৎসরিক এবং মাসিক বিভিন্ন দিন উপলক্ষে বোনাস প্রদান করা হয়। ১১ তম গ্রেডের কর্মকর্তাদের বছরে সব মিলিয়ে তিন বার বোনাস প্রদান করা হয়। প্রথম দুই বার মুসলমানদের পবিত্র ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা উপলক্ষে ১২,৫০০ টাকা করে সর্বমোট ২৫ হাজার টাকা বোনাস দেওয়া হয়। এছাড়া তৃতীয় বার মূল বেতন অনুযায়ী ২০% হারে বৈশাখী ভাতা প্রদান করা হয়ে থাকে।গে

১১ তম গ্রেডে চাকরি পেতে কি যোগ্যতা লাগে

বর্তমানে নিম্ন শ্রেণীর চাকরি পাওয়া তুলনামূলক কঠিন আকার ধারণ করেছে। সেই হিসাবে ১১ তম গ্রেডে চাকরি পাওয়া সোনার হরিণ পাওয়ার মতো দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১১ তম গ্রেডের কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে প্রচুর পড়া শোনা করতে হবে। ১১ তম গ্রেডে চাকরি পেতে সর্বনিম্ন স্নাতক ও সমমান ডিগ্রী অর্জন করতে হবে। তবে ১১ তম গ্রেডের চাকরির ক্ষেত্রে উচ্চ ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

১১ তম গ্রেডে সুযোগ সুবিধা

বাংলাদেশের প্রত্যেকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব কর্মকর্তাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয়। ১১ তম গ্রেডের একজন কর্মকর্তা বাৎসরিক এবং মাসিক বিভিন্ন ভাতা ও বোনাস পাওয়ার সুযোগ সুবিধা ভোগ করে থাকে। এছাড়া ১১ তম গ্রেডের বিভিন্ন পদে কর্মরত কর্মকর্তারা অবসরের পর এককালীন কয়েক লাখ টাকা এবং প্রতি মাসে মাসে চিকিৎসা ভাতা সহ মূল বেতনের অর্ধেক টাকা পেয়ে থাকে।

২০১৫ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বেতন স্কেলের যে গ্যাজেট পাশ হয় সেই গ্যাজেটের আদেশ অনুযায়ী বর্তমানে সকল সরকারি চাকরিজীবীর বেতন স্কেল তথা মূল বেতন, ভাতাদি ও গ্রেড নির্ধারিত হয়। ১১ তম গ্রেডের একজন কর্মকর্তা চাকরি জীবনে এবং অবসরের পর নানা বিধি সুযোগ সুবিধা ভোগ করে থাকে। যার ফলশ্রুতিতে বর্তমানে ১১ তম গ্রেডের চাকরির চাহিদা তুলনামূলক অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।

বেতন গ্রেড নিয়ে আরও দেখুনঃ

সিরিয়ালবিভিন্ন গ্রেডের বেতন তালিকা
৯ম গ্রেডের মোট বেতন কত
১০ তম গ্রেডের বেতন কত
১১ তম গ্রেডে বেতন কত
১৪ তম গ্রেডে বেতন কত
১৭ তম গ্রেডে বেতন কত টাকা
২০ তম গ্রেডের বেতন কত

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top