ফুড ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন কত ২০২৪

ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং একটি জনপ্রিয় পেশা। বর্তমানে বাংলাদেশে ফুড ইঞ্জিনিয়ার এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে বর্তমান বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের অনেক তরুণ তরুণী ফুড ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন লালন করে বড় হচ্ছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের একজন ফুড ইঞ্জিনিয়ার মূলত দ্বিতীয় শ্রেণি অর্থাৎ ১০ তম গ্রেডের বেতন স্কেল অনুযায়ী মাসিক বেতন পেয়ে থাকে। একজন ফুড ইঞ্জিনিয়ারের ন্যূনতম মাসিক বেতন সর্বনিম্ন প্রায় ২২ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ প্রায় ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

বর্তমানে সরকারি চাকরি পাওয়া সোনার হরিণ পাওয়ার মতো দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে অসংখ্য ফুড ইন্ড্রাস্ট্রিতে ফুড ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ দেওয়া হয়। যার ফলে বাংলাদেশের শিক্ষিত তরুণ প্রজন্ম সরকারি চাকরির আশা পরিত্যাগ করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ফুড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছে। বর্তমান তরুণ প্রজন্মের এ আগ্রহকে প্রাধান্য দিয়ে বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং শাখা চালু করেছে।

একজন ফুড ইঞ্জিনিয়ার এর কাজ কি

বাংলাদেশের সকল নাগরিকদের খাদ্যের চাহিদা মাথায় রেখে বৈজ্ঞানিক উপায়ে বিভিন্ন যন্ত্রকৌশল ব্যবহার করে ভেজালমুক্ত সুষম খাদ্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাত করণে ফুড ইঞ্জিনিয়ার কাজ করে থাকে। এক কথায় উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভেজালমুক্ত সুষম খাবার তৈরি এবং প্রক্রিয়াজাত করণ ফুড ইঞ্জিনিয়ারের প্রধান কাজ।

ফুড ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন কত

বর্তমানে ভেজাল মুক্ত সকল খাবার উৎপাদনে বাংলাদেশ সরকার কাজ করে যাচ্ছে। খাদ্য দ্রব্যের সঠিক গুনাগুন বজায় রেখে কিভাবে উৎপাদন করা যায় এই নিয়ে বাংলাদেশ সরকার নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে। বাংলাদেশ সরকারের নির্ভেজাল খাদ্য উৎপাদনের এই প্রকল্পকে এগিয়ে নিতে ফুড ইঞ্জিনিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

একজন ফুড ইঞ্জিনিয়ার সঠিক গুনাগুন সম্পন্ন খাদ্য উৎপাদন নয় বরং উৎপাদন থেকে শুরু করে প্রসেসিং সকল ক্ষেত্রে সমান ভাবে কাজ করে থাকে। অধিকাংশ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ফুড ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারণ করা হয়। বাংলাদেশে একজন ফুড ইঞ্জিনিয়ার এর মাসিক বেতন সর্বনিম্ন প্রায় ৩৫ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ প্রায় ৪০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

খাদ্য অধিদপ্তরে ফুড ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন কত

সরকারি চাকরি প্রত্যাশী ব্যক্তিদের জন্য খাদ্য অধিদপ্তর এক অন্যতম প্রাপ্তি। খাদ্য অধিদপ্তরের ল্যাবরেটরিতে প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে খাদ্যের গুণগত মান পরীক্ষা করে বাজারজাত করার জন্য নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানো হয়। খাদ্য অধিদপ্তরের এই পরীক্ষা-নিরীক্ষার একটি বড় দায়িত্ব ফুড ইঞ্জিনিয়ারদের পালন করতে হয়।

বর্তমানে অনেকেই প্রাতিষ্ঠানিক ও কারিগারি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ফুড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে খাদ্য অধিদপ্তর সহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিজেদের কর্মক্ষেত্র করে তুলেছে। খাদ্য অধিদপ্তরের ফুড ইঞ্জিনিয়ারগন মূলত দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করে। তাই বলা যায় খাদ্য অধিদপ্তরের একজন ফুড ইঞ্জিনিয়ারের মাসিক বেতন ন্যূনতম সর্বোচ্চ ৩৮ থেকে ৩৯ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

ফুড প্রসেসিং ইঞ্জিনিয়ার এর বেতন কত

বর্তমানে খাদ্য দ্রব্যের চাহিদার সাথে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশে ফুড ইন্ডাস্ট্রির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ সহ বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই প্রতিনিয়ত ফুড ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠছে। এ সকল ফুড ইন্ডাস্ট্রি পরিচালনার জন্য প্রচুর পরিমাণে ফুড ইঞ্জিনিয়ার প্রয়োজন। ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এর আরেকটি বৃহৎ শাখা ফুড প্রসেসিং ইঞ্জিনিয়ারিং। বর্তমানে একজন ফুড প্রসেসিং ইঞ্জিনিয়ার এর নূন্যতম মাসিক বেতন প্রায় ৩২ হাজার টাকা থেকে ৪৩,৫০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

প্রাণ কোম্পানিতে ফুড ইঞ্জিনিয়ার এর বেতন কত

খাদ্য জাতীয় পণ্য উৎপাদনকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে প্রাণ কোম্পানি অন্যতম। প্রাণ কোম্পানি প্রতিনিয়ত তাদের উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান উন্নত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। প্রাণ কোম্পানির খাদ্য দ্রব্যের গুণগত মান পরীক্ষা নিরীক্ষা ও প্রসেসিং থেকে শুরু করে প্রক্রিয়াজাত করণ পর্যন্ত ফুড ইঞ্জিনিয়ার এর গুরুত্ব অপরিসীম।

প্রাণ কোম্পানির ফুড ইঞ্জিনিয়ারদের বিভিন্ন শাখা রয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং এর এ সকল শাখা অনুযায়ী বেতন নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। প্রাণ কোম্পানির একজন ফুড ইঞ্জিনিয়ারের ন্যূনতম মাসিক বেতন সর্বনিম্ন প্রায় ২৭ হাজার টাকা থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এছাড়া প্রাণ কোম্পানির একজন ফুড প্রসেসিং ইঞ্জিনিয়ার এর ন্যূনতম মাসিক বেতন প্রায় ৩০ হাজার টাকা থেকে ৩২ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ফুড ইঞ্জিনিয়ার এর বেতন কত

বাংলাদেশ সহ সমগ্র বিশ্বে ফুড ইন্ডাস্ট্রির সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে ফুড ইঞ্জিনিয়ার এর চাহিদা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে। একজন ফুড ইঞ্জিনিয়ার মূলত খাদ্যদ্রব্য বায়োলজিক্যাল বা ফার্মাসিটিউক্যাল উৎপাদন প্রক্রিয়ার নকশা ও উৎপাদন ব্যবস্থার উন্নয়নে সহায়তা করে থাকে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রেও অনেক ফুড ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ দেওয়া হয়। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে একজন ফুড ইঞ্জিনিয়ার এর ন্যূনতম মাসিক বেতন প্রায় ৪০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

ফুড ইঞ্জিনিয়ার এর শিক্ষাগত যোগ্যতা

একজন খাদ্য প্রকৌশলী বা ফুড ইঞ্জিনিয়ার হতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি হতে হবে। বাংলাদেশে বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ রয়েছে। এ সকল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে তত্তীয় শিক্ষার পাশাপাশি ব্যবহারিক শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের খাদ্য উৎপাদন ও গুণগতমান বৃদ্ধি সহ বাজারজাত করণের কৌশল সঠিক ভাবে শেখানো হয়।

বাংলাদেশ সহ বিশ্বের সকল উন্নত দেশ গুলোতে ফুড ইঞ্জিনিয়ার এর বড় ভবিষ্যৎ রয়েছে। কেননা বর্তমান সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করা। ফুড ইঞ্জিনিয়ারের চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে বেতনও বৃদ্ধি করা হচ্ছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বিপুল অর্থ বেতন প্রদানের মাধ্যমে ফুড ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top