ড্রাইভিং একটি উচ্চ উপার্জনকারী পেশা। বর্তমানে অসংখ্য বাংলাদেশ নাগরিক সিঙ্গাপুরে বিভিন্ন গাড়ির ড্রাইভার হিসেবে কর্মরত রয়েছে। ড্রাইভিং ভিসায় সিঙ্গাপুর যাওয়ার জন্য প্রথমে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশের যুব উন্নয়ন কেন্দ্র সহ বিভিন্ন সংস্থা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ড্রাইভিং শিখিয়ে থাকে। সরকারি সংস্থা গুলো অল্প টাকায় সিঙ্গাপুর ড্রাইভিং ভিসা তৈরি করে দেওয়ার পাশাপাশি বি আর টি সি কর্তৃক ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করে থাকে। সিঙ্গাপুরের একজন ড্রাইভার লাখ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারে।
সিঙ্গাপুরে একজন ড্রাইভার এর মাসিক বেতন বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে উঠানামা করে। তবে সচারচর একজন ড্রাইভার এর সর্বনিম্ন মাসিক বেতন ন্যূনতম প্রায় ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ প্রায় ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। বর্তমানে সিঙ্গাপুরে বিভিন্ন কাজের ভিসা পাওয়া যায়। তবে সকল ভিসার মধ্যে ড্রাইভিং ভিসায় সিঙ্গাপুর বিপদের পড়ার সম্ভাবনা কম থাকে। যার ফলে পূর্বের তুলনায় ড্রাইভিং ভিসার চাহিদা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। চাহিদা বৃদ্ধির ফলে সিঙ্গাপুর ড্রাইভিং ভিসা পাওয়া তুলনামূলক কঠিন আকার ধারণ করেছে।
সিঙ্গাপুর ড্রাইভিং ভিসা বলতে কী বোঝায়
ভিসা বলতে মূলত নাগরিকত্ব ব্যতীত অন্য দেশে বৈধ ভাবে প্রবেশের অনুমতি পত্র কে বোঝানো হয়। সিঙ্গাপুর ড্রাইভিং ভিসা বলতে সিঙ্গাপুরের নাগরিক না হয়ে সিঙ্গাপুর বৈধ ভাবে ড্রাইভার এর কাজ করার অনুমতি পত্রকে বোঝানো হয়ে থাকে। বর্তমানে অসংখ্য বাংলাদেশী বাঙ্গালী সিঙ্গাপুরের নাগরিক না হয়ে সিঙ্গাপুর ড্রাইভার এর চাকরি করছে।
সিঙ্গাপুর ড্রাইভিং ভিসা বেতন কত
বর্তমানে সিঙ্গাপুর প্রচুর ড্রাইভার এর চাহিদা রয়েছে। সিঙ্গাপুরে একজন ড্রাইভারের বেতন কত হবে তা গাড়ির ধরনের উপর নির্ভর করে। যেমন সরকারি গাড়ি চালানোর জন্য এক বেতন আবার বেসরকারি গাড়ি চালানোর জন্য বেতন ভিন্ন হয়ে থাকে। সিঙ্গাপুরে একজন গাড়ির ড্রাইভার প্রতি মাসে ন্যূনতম ৪০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ প্রায় ৭০ হাজার টাকা থেকে ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকে।
সিঙ্গাপুর ড্রাইভিং ভিসার দাম কত
ড্রাইভিং ভিসায় সিঙ্গাপুর যেতে কয়েক লাখ টাকা খরচ করতে হয়। তবে সিঙ্গাপুর যাওয়ার মোট খরচের অধিকাংশ টাকা ভিসা তৈরি করতে ব্যয় হয়ে থাকে। বর্তমানে যুব উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে ফ্রিতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গাড়ির ড্রাইভিং শিখিয়ে বিদেশ যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর ড্রাইভিং ভিসা তৈরি করতে ন্যূনতম প্রায় ৫ লাখ টাকা থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে থাকে।
সিঙ্গাপুর সরকারি গাড়ির ড্রাইভার এর বেতন কত
বর্তমানে সিঙ্গাপুর বিশ্বের অন্যতম ধনী রাষ্ট্র। সিঙ্গাপুরে অসংখ্য অগণিত সরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ সকল প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিয়ত কর্মরত উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের গাড়ি পরিচালনা করার জন্য ড্রাইভার নিয়োগ দেওয়া হয়। সিঙ্গাপুরে সরকারি প্রতিষ্ঠানের উৎস পদস্থ কর্মকর্তার গাড়ির একজন ড্রাইভার এর ন্যূনতম মাসিক বেতন সর্বনিম্ন প্রায় ৮০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ প্রায় ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
সিঙ্গাপুর মালিকাধীন গাড়ির ড্রাইভার এর বেতন কত
বর্তমানে সিঙ্গাপুর পৃথিবীর সকল উন্নত শীল রাষ্ট্র গুলোর মধ্যে একটি। সিঙ্গাপুরের প্রত্যেকটি নাগরিক ধনী হওয়ায় তাদের গাড়ির ড্রাইভার হিসেবে প্রতিনিয়ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ড্রাইভার নিয়োগ দেওয়া হয়। মালিকাধীন গাড়ির ড্রাইভারদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা রয়েছে। সিঙ্গাপুরের মালিকাধীন গাড়ির একজন ড্রাইভারের ন্যূনতম মাসিক বেতন সর্বনিম্ন প্রায় ৪০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ প্রায় ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
সিঙ্গাপুর কোম্পানির গাড়ির ড্রাইভার এর বেতন কত
বর্তমানে সিঙ্গাপুরে অসংখ্য মালিকাধীন কোম্পানি তথা ফ্যাক্টরি রয়েছে।এ সকল ফ্যাক্টরি থেকে মালামাল স্থানান্তরের জন্য অসংখ্য মালবাহী ট্রাক রয়েছে। এসব মালবাহী ট্রাকের ড্রাইভার হিসেবে বিভিন্ন সময় ড্রাইভার নিয়োগ প্রদান করা হয়। সিঙ্গাপুরের কোম্পানি অনুযায়ী ড্রাইভার এর বেতন ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। সিঙ্গাপুরের কোম্পানি বা ফ্যাক্টরির মালবাহী গাড়ির ড্রাইভার এর ন্যূনতম মাসিক বেতন সর্বনিম্ন প্রায় ৬০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ প্রায় ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
সিঙ্গাপুর ড্রাইভিং এর গতিসীমা কত
ড্রাইভিং এর গতিসীমা বিভিন্ন স্থানের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়ে থাকে। সিঙ্গাপুর উন্নত শহর হওয়ায় কঠোর ভাবে নিয়ম মেনে গাড়ি চালাতে হয়। কেননা সিঙ্গাপুরের ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন কারী ড্রাইভার এর কাছ থেকে সিঙ্গাপুর পুলিশ জরিমানা আদায় করে থাকে। সিঙ্গাপুরে গাড়ির সর্বোচ্চ গতি সীমা ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
এছাড়া স্কুল ও কলেজ এবং হাসপাতালের মতো প্রতিষ্ঠান গুলোর সামনের রাস্তায় গাড়ির গতি সীমা সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটার রাখতে হবে। এছাড়া সিঙ্গাপুরের বেশ কিছু অঞ্চলে গাড়ি সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার বেগে ড্রাইভ করার নির্দেশ প্রদান করা রয়েছে। সকল ড্রাইভারকে এ সকল নির্দেশনা অনুযায়ী গাড়ি ড্রাইভ করতে হবে।
সিঙ্গাপুর ড্রাইভিং ভিসায় যেতে কত টাকা লাগে
বর্তমানে সিঙ্গাপুরের জনপ্রিয় ভিসা গুলোর মধ্যে ড্রাইভিং ভিসা অন্যতম। ড্রাইভিং ভিসায় সিঙ্গাপুর যেতে বেশ কিছু খাঁতে লাখ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে থাকে। সিঙ্গাপুরের ড্রাইভিং ভিসা বাবদ ৫ লাখ টাকা থেকে ৬ লাখ টাকা এবং বিমান ভাড়া বাবদ ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে থাকে।
এছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স, মেডিকেল রিপোর্ট সহ আনুষাঙ্গিক কাগজপত্র তৈরি করতে ন্যূনতম প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে থাকে। অর্থাৎ সিঙ্গাপুর ড্রাইভিং ভিসায় যেতে ন্যূনতম ৮লাখ টাকা থেকে ৯ লাখ টাকা পর্যন্ত বাজেট রাখতে হবে। বিমানের ক্যাটাগরি অনুযায়ী টিকিটের মূল্য কম বেশি হয়ে থাকে। যার ফলে সিঙ্গাপুর যাওয়ার খরচ নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব না।
সিঙ্গাপুর ড্রাইভিং ভিসা তৈরি করতে কি কি কাগজপত্র লাগে
বর্তমানে বাংলাদেশের চাকরির বাজারের পরিস্থিতি খুবই জটিল। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের শিক্ষিত তরুণ প্রজন্মের অনেকেই ফ্রি ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ নিয়ে সিঙ্গাপুর ভিসা তৈরি করার পরিকল্পনা করছে। সিঙ্গাপুর ভিসা তৈরি করতে বেশ কিছু কাগজ পত্র জমা দিতে হয় এবং বেশ কিছু নিয়মের মধ্যে দিয়ে ড্রাইভিং ভিসা তৈরি করতে হয় ।
- প্রথমত অবশ্যই আপনার সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত যে কোন ব্যক্তির কাছ থেকে আমন্ত্রণ পত্র এর প্রয়োজন হবে।
- জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটো কপি জমা দিতে হবে।
- ড্রাইভিং ভিসা তৈরি করার জন্য নির্ধারিত আবেদন ফি বাবদ ৩০০ সিঙ্গাপুর ডলার প্রদান করতে হবে।
- ফ্লাইট এর তারিখ থেকে কমপক্ষে ছয় মাস মেয়াদ আছে এমন একটি পাসপোর্ট থাকতে হবে এবং অবশ্যই উক্ত পাসপোর্টে একটি খালি পাতা থাকতে হবে।
- এছাড়া গত তিন মাসের মধ্যে তোলা আবেদনকারীর দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবি লাগবে। যার ব্যাকগ্রাউন্ড হবে সাদা রঙ্গের।
বর্তমানে বাংলাদেশী নাগরিকদের মধ্যে সিঙ্গাপুর যাওয়ার চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি ভিসা তৈরি ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি আগের তুলনায় অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক অসাধু দালাল প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকে। তাই সিঙ্গাপুর ড্রাইভিং ভিসা তৈরি করার ক্ষেত্রে এ সকল অসাধু দালাল থেকে সদা সতর্ক থাকতে হবে। অন্যথায় বিপদের মুখে পতিত হতে হবে।
আরও পড়ুনঃ